বাংলাদেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে লিবারেল ইসলামিক জোট ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এমন ঐক্যমতে পৌছান দুই জোটের শীর্ষ নেতারা।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচন আসলেই সাম্প্রদায়িক একটি গোষ্ঠী দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। ধর্মকে ব্যবহার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য তারা সবসময় প্রস্তুত থাকে। নির্বাচনেও ধর্মকে ব্যবহারের প্রভাব বেশ লক্ষণীয় হয়ে থাকে। ধর্মকে ডাল হিসেবে ব্যবহার করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায় তাছাড়া বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা প্রতিমা ভাঙচুরসহ নানা নেক্কারজনক কাজ করে থাকে। এসব সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে পারলে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, নির্বাচন আসলেই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে। তাছাড়া সুযোগ পেলেই তারা ভিন্ন ধর্মের মানুষের উপর হামলে পডে। বিগত বছরের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা ভাঙচুর হামলার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এনিমি প্রপার্টিকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাবর্তন আইনের মাধ্যমে জমির প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর চালু হলেও সেখানে বছর পর বছর সময় লেগে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে মানবতার কল্যাণে ভাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হলেই বাঙালি জাতি সাম্প্রদায়িকতার রাহুর কবল থেকে মুক্ত পাবে। তাছাড়া হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য জোটের ছয় দফা দাবি কে সমর্থন করার জন্য লিবারেল ইসলামিক জোটের নেতাদের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান শাহজাদা ডক্টর সৈয়দ সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারী বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উপজীবী করে আমরা আজকে একত্র হয়েছি। সাম্প্রদায়িকতা কোন জাতির জন্যই মঙ্গলজনক নয়। ইসলামের কোন জবরদস্তি বা বাড়াবাড়ি নেই। আগামী দুর্গাপূজায় আমাদের নেতাকর্মীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপ পাহারা দিবে তাদের ধর্মীয় কাজ সম্পাদনের জন্য সর্বাত্মক সহায়তা করবে এবং উভয়ের জোটের পক্ষ থেকে একটি লিয়াজো ও কমিটি করে ঢাকায় কন্ট্রোল রুম স্থাপনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম এখানে কোন জবরদস্তি অথবা মারামারি হানাহানি হিংসা বিদ্বেষকে সমর্থনের সুযোগ নেই। তাই বাংলাদেশে লিবারেল ইসলামিক জোট সর্বদাই সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে। আজকে উভয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের মাঝে এই মতবিনিময় সভাকে ফলপ্রসু আলোচনা হিসেবে সভায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, ব্যারিস্টার প্রশান্ত বড়ুয়া ও রমেন মন্ডল, লিবারেল ইসলামিক জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, জোটের কো-চেয়ারম্যান শাহ সুফি সৈয়দ আলম নুরী আল সুরেশ্বরী, মাহবুবুর রহমান জয় ফারাহনাজ হক চৌধুরী, হাসরত খান ভাসানী সহ জোটের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :