সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক মক্তব ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি চেষ্টা করছেন এক শিক্ষক। তিন বছর আগের এমন একটি ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সিলেটজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলার তাজপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম শরিফ উদ্দিন শরিফ। তিনি কানাইঘাট উপজেলার সিঙ্গারীপাড় এলাকার মুহিবুর রহমানের ছেলে। তিনি দুই স্ত্রী ও দুই সন্তানের জনক। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আউয়াল।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, মক্তবপড়ুয়া ছাত্রীকে (১০) কক্ষে ডেকে এনে জড়িয়ে ধরেন ওই শিক্ষক। পরে তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রীটি চলে যাওয়ার পর যে মোবাইল দিয়ে চিত্র ধারণ করা হয়েছে সেটি বন্ধ করতে দেখা যায় তাকে। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষক নিজেই এই ভিডিও ধারণ করেছেন।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী ২০২২ সালে নানার বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলা নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের একটি গ্রামের থেকে মক্তবে পড়াশোনা করত। তখন তার বয়স ১০ বছর ছিল। ওই সময় তার ওপর শিক্ষকের দৃষ্টি পড়ে। এ ঘটনার পর সে ভয়ে মক্তবে আসা বন্ধ করে দেয়। এরপর নানা বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি চলে যায়।
এদিকে ঘটনার প্রায় তিন বছর পর ভিডিওটি ভাইরাল হলে অভিযুক্ত শিক্ষক শরিফ উদ্দিন শরিফ পালিয়ে যান। তাকে ধরতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অতীতে নারীসংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগের কারণে শরিফ উদ্দিনকে কোনো মসজিদ বা মাদরাসায় স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
পুলিশ জানায়, ভিডিও ভাইরাল হলে তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান চালায়। বুধবার রাতে কানাইঘাটের সিঙ্গারীপাড়ে অবস্থান শনাক্ত করে শরিফ উদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এরপর জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরে ও বালাগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পরে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক শরিফ উদ্দিনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ঘটনাটি ২০২২ সালের এবং ঘটনাস্থল গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের একটি মক্তবে। শরিফ উদ্দিন সেখানে একটি জামে মসজিদে ছানী ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত শরিফ উদ্দিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) ও নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পুলিশ বিট কর্মকর্তা দিদার আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ভুক্তভোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :