দারিদ্র্য ও খাদ্যসংকটে জর্জরিত কিউবায় “ভিক্ষুক নেই” বলে মন্তব্য করে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশটির শ্রম ও সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতো-কাবরেরা। শেষ পর্যন্ত তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, কিউবার পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্তা এলেনা দাবি করেন, কিউবায় প্রকৃত কোনো ভিক্ষুক নেই। যারা ময়লার বিন ঘেঁটে বেড়ায়, তারা মূলত সহজে আয় করার উদ্দেশ্যে এমনটা করে।
তার এই মন্তব্য দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিউবার জনগণ, প্রবাসী কিউবানরা এবং অধিকারকর্মীরা একযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, এমন মন্তব্য কিউবার দরিদ্র জনগণের প্রতি অপমানস্বরূপ।
দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেলও পরবর্তীতে এক সংসদীয় অধিবেশনে মন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করেই বলেন, দেশের নেতৃত্ব এতটা ঔদ্ধত্যপূর্ণ হতে পারে না কিংবা বাস্তবতা থেকে এতোটা বিচ্ছিন্ন থাকা চলবে না।
এই প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতেই মার্তা এলেনা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন এবং কিউবান কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকার তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে।
কিউবায় সরকারিভাবে ভিক্ষুকের সংখ্যা প্রকাশ না করা হলেও রাজধানী হাভানাসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তাঘাট ও ময়লার স্তূপে খাদ্য বা পুনঃব্যবহারযোগ্য জিনিস খুঁজে বেড়ানো মানুষের দৃশ্য নিয়মিত। অনেকেই এসব মানুষকে প্রকৃত অর্থেই চরম দারিদ্র্যের শিকার বলে মনে করেন।
এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে মন্ত্রীর বক্তব্য সাধারণ জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের উদাসীনতা ও কর্তৃত্ববাদী মানসিকতার প্রতিচ্ছবি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কিউবায় দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি, খাদ্য ও জ্বালানির ঘাটতি, এবং জীবনের মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে নাগরিকদের সীমাহীন কষ্টের বাস্তবতা দিনদিন প্রকট হচ্ছে। এই অবস্থায় শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতার পক্ষ থেকে এমন মন্তব্যে ক্ষোভ হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
আপনার মতামত লিখুন :