Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাবের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়


দৈনিক পরিবার | স্টাফ রিপোর্টার জুলাই ৯, ২০২৫, ০৩:১২ পিএম কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাবের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে নানা অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ কাবের নামে ২ টাকার স্থলে ৩০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি, অভিভাবক এবং এলাকার শিক্ষানুরাগীদের মনে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। 
স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মারিয়া আক্তার কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছেন বলে জানা গেছে। ওই স্কুলে ৩য়-৫ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা আনুমানিক ২৪০ জন। নিয়ম অনুযায়ী ২ টাকার স্থলে অতিরিক্ত ২৮ টাকা নেয়া হলেও তা কোথাও জমা দেয়া হয়নি। জনতা ব্যাংক বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শাখায় কাবের একটি নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। উপজেলার ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা (জনপ্রতি ২ টাকা) অর্থ ওই ব্যাংক একাউন্টে জমা করা হয়। এছাড়া স্কুল প্রতি ৪শত টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে হয়। ইতোমধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কাব ও রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেয়া হয়েছে। 
সরকারিভাবে জনপ্রতি ২ টাকা করে নেয়ার কথা থাকলেও মৌখিকভাবে ৬ টাকা করে নেয়ার অলিখিত নির্দেশনা আছে বলে জানা যায়। সেই হিসেবে কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনপ্রতি ১০ টাকা করেও নেয়। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই দেখে থাকেন। কিন্তু কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে নেয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 
সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বিগত সময়ে স্লিপের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ছিল। আয় ব্যয়ের বিল ভাউচার সঠিক নেই। প্রধান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলের আসেন না, কিন্তু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে রাখেন। তিনি বেশির ভাগ সময় রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করেন। ফলে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম অনেকটা ব্যহত হচ্ছে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাবেক প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব স্কাউট কার্যক্রমের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা যাবে না। কাব স্কাউট একটি শিক্ষামূলক কার্যক্রম এবং এর জন্য কোন প্রকার অর্থ আদায়ের নিয়ম নেই। যদি কোন বিদ্যালয় অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে, তাহলে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানো উচিত। কারণ কাব স্কাউটিং হল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শিক্ষামূলক কার্যক্রম, যা তাদের বিভিন্ন দক্ষতা এবং গুণাবলী বিকাশে সহায়তা করে। এই কার্যক্রমের জন্য অতিরিক্ত কোন ফি বা চাঁদা আদায়ের নিয়ম নেই। যদি কোন বিদ্যালয় অতিরিক্ত টাকা দাবি করে, তবে তা অনৈতিক এবং কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা উচিত। বিশেষ করে উপজেলা শিক্ষা অফিস বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সাথে যোগাযোগ করে অভিযোগ দেয়া উচিত।
অতিরিক্ত টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন বিষয় জানার জন্য কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারিয়া আক্তারকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ জানান, কাবের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৬ জুন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন বিভাগ) তাপস কুমার আচার্য্য স্বাক্ষরিত দেশের শতভাগ বিদ্যালয়ে ২টি করে কাব স্কাউট দল গঠন করার নির্দেশনা প্রদান হয়। 

Side banner