এক মাস ধরে নিখোঁজ থাকা মা শায়েস্তারা বেগমের (৭০) খোঁজে পাগলপ্রায় ছিলেন মেয়ে আছমা বেগম। অবশেষে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্ধান মেলে, সেই বৃদ্ধা নারী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অপ্রকৃতস্থ ও গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি ছিলেন। সোমবার রাতে মেয়ে আছমা তাকে এম্বুলেন্সে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের এই অসহায় বৃদ্ধা বিধবার পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাব।
দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বৃষ্টির মধ্যেও মঙ্গলবার (৮ জুলাই) প্রেসক্লাব সভাপতি মোল্লা মো. নাসির আহমেদ, সহসভাপতি ফয়সল আহমেদ খান, সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সোহাইল আহমেদ সরাসরি বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে চাল, ডাল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী এবং নগদ অর্থ পৌঁছে দেন।
এই মানবিক সহায়তায় পাশে ছিল বাঞ্ছারামপুর ইসলামী হাসপাতাল ও সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ইসলামী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন রিপন জানিয়েছেন, বৃদ্ধার যাবতীয় ওষুধ আজীবন বিনামূল্যে প্রদান করা হবে ইসলামী হাসপাতালের নিজস্ব ফার্মেসী থেকে।
সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আব্দুর রব জানান, ভবিষ্যতেও বৃদ্ধার জন্য সহায়তার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় জানায়, তারা বিষয়টি আগে জানতেন না। তবে বুধবার নগদ ৫ হাজার টাকা এককালীন সহায়তা ও বয়স্ক ভাতা কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
বৃদ্ধার মেয়ে আছমা জানান, আম্মার পুষ্টিহীনতার কারণে দাঁড়াতে পারে না। শরীরের পেছনের অংশে পচন ধরে ইনফেকশন হয়ে পোকা ধরেছে।
উল্লেখ্য, ২২ বছর আগে বিধবা হওয়া ৭০ বছর বয়সী শায়েস্তারা বেগমের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার সন্তানরা প্রেসক্লাবের এমন মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সমাজের বিত্তবানদের প্রেসক্লাবের মাধ্যমে মায়ের চিকিৎসায় সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাবের এই মানবিক ভূমিকা প্রমাণ করেছে, দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসতে পারে একটি সংবাদকর্মীদের সংগঠনও।
আপনার মতামত লিখুন :