সিলেটে ঘুষ-তদবির ছাড়াই পুলিশের চাকরি হয়েছে ১৩১ তরুণ-তরুণীর। মূল্যায়ন হয়েছে মেধা ও যোগ্যতার। পূরণ হয়েছে হতদরিদ্র বাবা-মার স্বপ্ন। খুশিতে কেঁদে ফেললেন অনেকেই। পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ১৩১ জনকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
বসন্তের হিমেল হাওয়ায় গাঁয়ে শীতল পরশ,গভীর রাতে পায়ে সেন্ডেল শরীরে একটি শার্ট পরে,বসে বসে অপেক্ষার প্রহর যেনো শেষ হচ্ছে না,হঠাৎ মাইকে ডাকা হল নাম-নিজের নাম শুনেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন,সিলেট জেলা পুলিশে চাকরি হওয়া তরুণ-তরুণীরা। কেঁদে কেঁদে অনেকেই বলছেন কারো মা নাই আবার কারো বাবা নাই।ঘুষ-তদবির ছাড়াই পুলিশে চাকরি হয়েছে আমাদের। মূল্যায়ন হয়েছে মেধা ও যোগ্যতার। পূরণ হয়েছে আমাদের স্বপ্ন।চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ১৩১ জনকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান পুলিশ সুপার।
এ নিয়োগে গেল ১১-১২-১৩ ফেব্রুয়ারি টানা ৩ দিন ব্যাপী সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্স ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে, ৩৯৫৭ পুরুষ-নারী পদে নিয়োগের জন্য, শারীরিকভাবে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হয়।আবেদনকারীদের মধ্যে ২৫১২ জন চাকুরী প্রত্যাশী মাঠে উপস্থিত থেকে,নিজেদের শারিরীক সক্ষমতার পরিচয় দেন। ৩ দিনের শারিরীক সক্ষমতা যাচাই প্রক্রিয়ায় ৮০১ জন প্রার্থীকে শারিরীকভাবে যোগ্য বলে বিবেচিত করা হয়।শারীরিকভাবে যোগ্য প্রার্থীদের গত ১৮ ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট ৮০১ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত ফলাফলে ২৬৬ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়।
নিয়োগ কমিটি কর্তৃক সাক্ষাতকার গ্রহণ করে ১৩১ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়।নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে ১১১ জন পুরুষ এবং ২০ জন নারী প্রার্থী রয়েছেন। নিয়োগ পাওয়া তরুণ তরুণীর অধিকাংশই হত দরিদ্র পরিবারের। তাদের কেউ দিনমজুরের সন্তান, আবার কেউবা এতিম। আজ তারা পুলিশ কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো.আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আমরা ১৩১ জনকে, পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দিয়েছি।এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, আনসার, এতিম,সাধারণ কোটার ছেলে-মেয়ে এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত অনেক মেধাবীও রয়েছে। প্রায় সবাই অসচ্ছল পরিবারের সন্তান।
তিনি আরও বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে দালাল ও প্রতারক চক্রকে দমন করার চেষ্টা করেছি এবং সক্ষম হয়েছি। সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ায় আমি ও আমার টিমের সদস্যরা অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত।
আপনার মতামত লিখুন :