Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

নোয়াখালীতে গলার কাঁটা ভেসাল জাল, প্রশাসন নিশ্চুপ


দৈনিক পরিবার | স্টাফ রিপোর্টার জুলাই ৯, ২০২৫, ১২:০৯ পিএম নোয়াখালীতে গলার কাঁটা ভেসাল জাল, প্রশাসন নিশ্চুপ

নোয়াখালীতে গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে আবারও ডুবে গেছে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো। সড়ক থেকে শুরু করে বাড়িঘর, হাট-বাজার পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও কোমরসমান পানি জমে রয়েছে দিনের পর দিন। তবে জলাবদ্ধতার পেছনে বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে অবৈধ ভেসাল জালের দৌরাত্ম্য, যা আজ ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য।
জানা গেছে, নোয়াখালীর ৯ উপজেলার মধ্যে জেলা শহর মাইজদী, চৌমুহনী, সোনাপুর, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সোনাইমুড়ী, সুবর্ণচর, কবিরহাটসহ বহু এলাকায় খাল-বিল, নালা ও ড্রেনের মুখে অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে ভেসাল জাল। ফলে বৃষ্টির পানি স্বাভাবিকভাবে নিষ্কাশনের পথ পাচ্ছে না। একদিকে ভারী বর্ষণ, অন্যদিকে এই জালগুলোর কারণে পানি আটকে থেকে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
জেলা শহরের বাসিন্দা মোতাহার হোসেন বলেন, টানা বর্ষণ ফলে পানিতে ডুবে আছে কাঁচা ও আধাপাকা সড়ক। রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। হেঁটে চলা পথচারীদেরও পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। বৃষ্টির পানি জমে অনেক দোকানপাটে পানি উঠে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পণ্যসামগ্রী।
সুবর্ণচর উপজেলার চর বৈশাখী এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফ সবুজ বলেন, গত বছর নোয়াখালীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। তখন ভেসাল জালের দৌরাত্ম বেড়ে গেছে। এরা কাউকে তোয়াক্কা করে না। খালের মুখে অবৈধভাবে ভেসাল জাল বসিয়ে রাখা হয়েছে। পানি নামতে পারে না। প্রশাসন শুধু দেখে কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না। প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত।
একই কথা বলেন বেগমগঞ্জের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আমার দোকানে পানি উঠেছে। এতে প্রায় লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। অথচ আমাদের খাল গুলো অনেক বড় বড় খাল। পানি উঠলে সহজেই নেমে যাওয়ার কথা কিন্তু খালের মুখে জাল বসিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর আমাদের ভোগান্তিও বেড়ে যাচ্ছে।
নুর হোসেন মনু নামে জেলা শহরের এক বাসিন্দা বলেন, খাল-বিল হচ্ছে পানি নামার স্বাভাবিক পথ। সেগুলো বন্ধ করে দিলে জলাবদ্ধতা হবে এটা তো জানা কথা। অবিলম্বে ভেসাল জাল অপসারণ এবং খাল সংস্কার না করলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন বলেন, খাল-ড্রেনের মুখে পাটা, জাল বসিয়ে মাছ ধরার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের কাজ গণ উপদ্রব হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে জানিয়ে তিনি সবাইকে সতর্ক ও সহযোগিতাশীল থাকার আহ্বান জানান।

Side banner