বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে গাইবান্ধা জেলা শিল্পকলা একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় সাধুসঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তিরোধান দিবস মানে হলো কোনো মহৎ ব্যক্তি বা সাধক ব্যক্তির মৃত্যুর দিন, যা তাদের স্মরণ ও সম্মান জানাতে পালিত হয়।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) যাদব সরকার, গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি বিদ্রোহ কুমার, ফুলছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জগৎবন্ধু মন্ডল, জেলা কালচারাল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমেদ, সহকারী কমিশনার আশরাফুল।
উল্লেখ্য যে গাইবান্ধা জেলার ৫০ জন সাধুকে নিয়ে গাইবান্ধা জেলার মুক্তমঞ্চে যার পাশ দিয়ে ঘাঘট নদী প্রবাহিত হয়ে গেছে সেই মুক্তমঞ্চে লালন সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষে, লালন সাঁইজিরর আধ্যাত্মিক গানগুলো পরিবেশিত হয় বাউল সাধুদের কন্ঠে। মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হয় লালন সাঁইজের গান। সাধু সঙ্গের শুরুতেই যে গানটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে জাত গেল জাত গেল বলে এই গানটির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হলেও কুষ্টিয়ার যাকে লালন কন্যা বলা হয় অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিনি যে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তার জন্য সবাই শোক প্রকাশ করেন। সাধুর সঙ্গের মুক্ত মঞ্চে লালন সাঁইজির গানে দর্শক শ্রোতাদের হৃদয়ে লালন সাঁইজির গানের কথা এবং বাউল সাধকদের নাচের মধ্য দিয়ে মুক্ত মঞ্চ টি মাতিয়ে তোলেন মাতিয়ে তোলেন পঞ্চাশ জন সাধু বাউল। সাধু সঙ্গের লালন সংগীত পরিবেশন শেষে আলোচনা সভায় বক্তারা লালন শাহের জীবন ও দর্শনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, লালন শাহ্ ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক, যিনি ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষে মানুষে ভালোবাসা ও ঐক্যের বাণী প্রচার করেছেন। তার কথা ও গান আধ্যাত্মিক ও সুফিবাদের পরিচয় বহন করে।
আলোচকরা বলেন, আজকের বিভাজিত সমাজে লালনের মানবতাবাদী শিক্ষা আগের চেয়ে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। তাঁর গান ও দর্শন আমাদের শেখায় ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। আলোচনা শেষে স্থানীয় বাউল সাধু সংঘের সাথে বসে মুক্তমঞ্চে একসঙ্গে কালচারাল অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট কলাকুশলী সাধুর সংঘের অনুষ্ঠানের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদেরকে নিয়ে মুক্তমঞ্চে খোলা আকাশের নিচে মাটির গন্ধে সুরের আনন্দে সুন্দর এক পরিবেশে সবার মন যখন ফুরফুরে মেজাজে তখন অনুষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সবাই মুক্তমঞ্চে বসে জেলা প্রশাসনের অতিথি আপ্যায়ন অংশ গ্রহণ করেন। সাধু বাউলদের সঙ্গে বসে মুক্তমঞ্চে আপ্যায়ন গ্রহণ করার সময় একটি দৃষ্টান্ত ফুটে ওঠে মানুষে মানুষে বিভেদ নয় এখনো মানুষে মানুষের যে আত্মার সম্পর্ক আছে একসঙ্গে বসে মিলনমেলার মধ্য দিয়ে সুন্দর পরিবেশে আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে তা পুষ্পঠিত হয়ে ফুটে উঠেছে ।
আপনার মতামত লিখুন :