Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

গাইবান্ধা জেলা রিক্সা ভ্যান, অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের ফল প্রকাশ


দৈনিক পরিবার | শাহিন নুরী অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম গাইবান্ধা জেলা রিক্সা ভ্যান, অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের ফল প্রকাশ

১৭ই অক্টোবর শুক্রবার গাইবান্ধার স্বনামধন্য বিদ্যালয় ইসলামিয়া স্কুল মাঠে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গাইবান্ধা জেলার রিক্সা ভ্যান, অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের রেজি নং রাজ (৮০৪) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় রাতে ভোট গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ইউনিয়নের সাধারণ সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
ভোটকেন্দ্র ঘিরে ছিল শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। ভোটের দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। প্রার্থীরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভোটারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালান। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে।
গাইবান্ধা জেলার রিক্সা ও ভ্যান, অটো রিক্সা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন ২০২৫ সালের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে  প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের  সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (জেএম শাখা, শিক্ষা শাখা, ট্রেজারী শাখা, তথ্য ও অভিযোগ শাখা এবং সিটিজেন কেয়ার)  মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান,সহকারী কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন সুকান্ত কুন্ডু ও সহকারী কমিশনার আশরাফুল হক এর সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ।ভোট গ্রহণ সকাল ৮:০০ টা হতে বিকাল ৪:০০ টা পর্যন্ত চলে। মোট ভোটার ছিলো ৫১০০, ভোট টার্ন আউট ছিলো প্রায় ৬২%, মোট ২৮ জন প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। চুড়ান্তভাবে ১৩ জন নির্বাচিত হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।নির্বাচনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ১৩ টি পদের জন্য ২৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে  । ভোটগ্রহণ শেষে গণনা সম্পন্ন করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি পদে রফিকুল ইসলাম হারিকেন মার্কা   প্রতীক নিয়ে ১৬৮৭ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন , তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ আশরাফুল আলম মিলন হাতি প্রতীক নিয়ে ৭৭০ ভোট পান। কার্যকরী সভাপতি মইনুল ইসলাম মুরাদ তলোয়ার প্রতীক নিয়ে ৯৭০ ভোট পেয়ে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ মজিবুর রহমান চাবি প্রতীক নিয়ে ৮১২ ভোট পান।  সহ- সভাপতি পদে  মো: আলম মিয়া তালা প্রতীক নিয়ে ১০০৬ ভোট পেয়ে সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ সাজু মিয়া টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে ৭১৮ ভোট পান।সাধারণ সম্পাদক পদে জিয়াউর রহমান সুমন গরুর গাড়ি প্রতীক নিয়ে ১৩৯৫ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ শাহ আলম বট গাছ প্রতীক নিয়ে ৭১০ ভোট পান। লাভলু মিয়া রিক্সা প্রতীক নিয়ে ৪২১ ভোট পান। সহ- সাধারন সম্পাদক মোঃ আব্দুল মতিন কুঁড়েঘর  প্রতীক নিয়ে ৭৬১ ভোট পান, মামুনুর রশিদ চাকা প্রতীক নিয়ে ৪৬৮ ভোট পান, ওয়াসিম আলম মই প্রতীক নিয়ে ৪৪৫ ভোট পান, সাদিকুল ইসলাম মাছ প্রতিক নিয়ে ৪৩৭ ভোট পান।  সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান ফুটবল প্রতীক নিয়ে ১০৫৭ ভোট পান, মিন্টু মিয়া টিয়া পাখি প্রতীক নিয়ে ৮৩৮ ভোট পান। কোষাধক্ষ্য মোহাম্মদ আলম মিয়া দেয়াল ঘড়ির প্রতীক নিয়ে ১২৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ আব্দুল হাই মিয়া হরিণ প্রতীক নিয়ে  ৮৪৬ ভোট পান, দপ্তর সম্পাদক প্রদীপ কুমার মোদক আনারস প্রতীক নিয়ে ৯৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুল ইসলাম  ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৮৪৬ ভোট পান।  সড়ক  সম্পাদক, কার্যকরী সদস্যরাও ভোট করে নির্বাচিত হন। । ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী প্রার্থীরা সকল শ্রমিকদের পাশে থেকে তাদের অধিকার ও কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অন্যদিকে পরাজিত প্রার্থীরাও নির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে শ্রমিক ঐক্য বজায় রাখার আহবান জানান। রিক্সা ভ্যান শ্রমিক, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের ভোটের প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো: মোস্তাফিজুর রহমান  বলেন , নির্বাচন উপলক্ষ্য নির্বাচনী এলাকায় এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে, যা শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক চর্চার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা গেছে। রিক্সা ভ্যান শ্রমিক, অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট দেখতে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ দুপুরে জুম্মার নামাজ শেষ করে ভোট কেন্দ্রে আসেন। ভোট সুন্দর পরিবেশে  হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য। তিনি ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যাপক  উপস্থিতি দেখতে পেয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন পরে ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে চলে যান। সকাল আটটা থেকে একটানা বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করলেও ভোটের ব্যালট পেপার গণনার সময় রুমের ভিতর থেকে ক্যামেরার মাধ্যমে বাহিরে রুমের ভোট গণনা  সচিত্র বাহিরে সরাসরি লাইভ ভিডিও মাধ্যমে দেখানো হয়। এতে করে প্রার্থী যারা সমর্থক এসেছিল তারা নীরব ভূমিকা পালন করে মাঠে বসে ভোট গণনার রেজাল্ট হওয়া পর্যন্ত বসে ছিল এবং শান্তিপূর্ণভাবে রেজাল্ট পেয়ে রাতে সুন্দর সাবলীল পরিবেশে বাসায় চলে যান। উল্লেখ্য যে গাইবান্ধার কয়েকটি উপজেলা থেকে শ্রমিকরা এসে যখন সুন্দর পরিবেশে ভোট দিয়ে যাচ্ছিল তখন তাদের জিজ্ঞেস করলে,  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক ভোটার বলেন এত সুন্দর পরিবেশে এর আগে রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট আমরা দেখিনি। আর এই ভোটে এত উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নির্বাচন আগামীতে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে। আমরা শ্রমিকরা কিছুই চাইনা আমরা চাই ভোট ও ভাতের অধিকার। আমাদের কোন সমস্যা হলে আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাই আমাদের পাশে এসে প্রথম দাঁড়ায়। তাই আমরা গণতান্ত্রিক ধারাকে মেনে আমাদের নেতাকে আমরা ভোট প্রদান করেছি। একটি নাগরিকের ভোট মহা মূল্যবান সম্পদ। আর দীর্ঘদিন পরে এই মহামূল্যবান সম্পদ শ্রমিক ইউনিয়নে যেমন ভোট  দিতে পেরেছি আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনেও যেন এই সুন্দর সাবলীল পরিবেশে ভোট প্রদান করতে পারি সে ব্যাপারে বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের  সুদৃষ্টি কামনা করছি।

Side banner