Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
অসুস্থ পশুর মাংস খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ

লোহাগড়ায় পশু জবাইয়ে নেই নীতিমালা


দৈনিক পরিবার | রাসেদুল রাসু নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০২:২১ পিএম লোহাগড়ায় পশু জবাইয়ে নেই নীতিমালা

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর শহরজুড়ে পশু জবাই ও মাংস বিক্রিতে নীতিমালা ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নির্দেশনা কার্যত অকার্যকর। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে নিয়মনীতি না মেনে প্রায়ই অসুস্থ, অপুষ্ট কিংবা রোগাক্রান্ত পশু জবাই করা হচ্ছে। এতে মাংসে জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ পড়ছেন চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
স্থানীয়দের দাবি, লোহাগড়ায় সরকারি অনুমোদিত কোনো ভেটেরিনারি সার্টিফায়েড স্লটার হাউজ নেই। অধিকাংশ মাংস ব্যবসায়ী নিজেদের মতো করে এলাকায় পশু জবাই করছেন। পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, রোগ শনাক্তকরণ, অ্যান্টিমর্টেম বা পোস্টমর্টেম চেক কোনোটিই নিয়মিতভাবে অনুসরণ করা হয় না।
পৌর এলাকার বিভিন্ন কসাইখানা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ জায়গায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করা হচ্ছে। রক্ত, বর্জ্য ও পশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়, যা থেকে সহজেই জীবাণু ছড়াতে পারে। মাংস সংরক্ষণের জন্য নেই কোনো উপযুক্ত ব্যবস্থা। ব্যবসায়ীরা রাতের আঁধারে বা ভোরে অসুস্থ পশু জবাই করে বাজারে সরবরাহ কওে যা সাধারণ ক্রেতা বুঝতেই পারেন না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, অসুস্থ পশুর মাংস খেলে সালমোনেলা, ইকোলাই, ব্রুসেলোসিস, অ্যানথ্রাক্সসহ নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে প্রবেশের ঝুঁকি থাকে। এতে শিশু, প্রবীণ এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম এমন মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে পারেন।
জনসাধারণের অভিযোগ, আমরা যে মাংস কিনে পরিবারকে খাওয়াই, সেটি আসলেই নিরাপদ কি না তা নিয়ে এখন ভয় আছে। স্থানীয় প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি জরুরি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রিয়াদ বলেন, পশু জবাইয়ের বিষয়ে আমাদের ভেটেরিনারি স্বাস্থ্য বিভাগ রয়েছে। তাদের নিয়মিত দায়িত্ব রয়েছে, কিন্তু তারা তা পালন করছে না এটা আমি খতিয়ে দেখছি।
পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নীতিমালা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন ও তদারকি দুর্বল। অসুস্থ পশু জবাই বন্ধে কসাইদের প্রশিক্ষণ, স্লটার হাউজ স্থাপন এবং নিয়মিত ভেটেরিনারি পরীক্ষার বিকল্প নেই।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসনের কঠোর আইন প্রয়োগ, আধুনিক স্লটার হাউজ নির্মাণ এবং নিয়মিত মনিটরিং চালু না হলে লোহাগড়ায় অসুস্থ পশু জবাই বন্ধ করা সম্ভব হবে না। যতদিন এই অনিয়ম চলবে, ততদিন সাধারণ মানুষ থেকেই যাবে স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে।

Side banner