বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে অনেক ভুল ধারণা এবং কিছু ক্ষেত্রে স্পষ্ট মিথ্যা তথ্য প্রচলিত রয়েছে। একটি সাধারণ ভুল ধারণা হলো, কোনো বিদেশিকে বিয়ে করলে সঙ্গে সঙ্গেই আপনি সে দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিষয়টি এমন নয়। কোনো দেশের নাগরিককে বিয়ে করলে সাধারণত আপনি সে দেশে বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন। কানাডার মতো দেশের কোনো নাগরিককে বিয়ে করলে সেখানে শুধু বসবাস শুরু করার এবং অন্য সবার মতো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।
তবে আরও কিছু দেশে স্থানীয় কোনো নাগরিককে বিয়ে করলে দ্রুত সময়ে নাগরিকত্ব পাওয়ার যায়। সাধারণত সেখানে কিছু সময় বসবাস করতে হয়। এরপর নিয়ম অনুযায়ী নাগরিকত্ব পাওয়া যায়।
ব্রাজিল:
পর্যটকদের জন্য ব্রাজিল বেশ জনপ্রিয় গন্তব্য। দেশটিতে রেসিডেনসি-বাই-ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামও চালু রয়েছে। তবে একজন ব্রাজিলিয়ানকে বিয়ে করলে, সেখানে মাত্র এক বছর টানা থাকার পরই আপনি দ্বিতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ব্রাজিল দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে এবং এর পাসপোর্ট দিয়ে অনেক দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা যায়।
স্পেন:
কোনো স্প্যানিশ নাগরিককে বিয়ে করলে প্রথম এক বছর ট্যাক্স দিয়ে থাকতে হবে। এরপরই আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই পাসপোর্ট দিয়ে পুরো বিশ্বের অনেক দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যায়। তবে স্পেন সাধারণত দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে না।
পর্তুগাল:
ইউরোপে গিয়ে যারা দ্বিতীয় পাসপোর্ট নিতে চান, তাঁদের জন্য পর্তুগাল বেশ জনপ্রিয় দেশ। আগে সাধারণ রেসিডেনসির মাধ্যমে পাসপোর্ট পেতে অন্তত ৬ বছর সময় লাগত দেশটিতে। সেটি সম্প্রতি বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। তবে পর্তুগিজ নাগরিককে বিয়ে করলে বা তাদের সঙ্গে তিন বছর ধরে সম্পর্কে থাকলে দ্রুত নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। এর জন্য পর্তুগালের মাটিতে থাকতে হবে, এমন নিয়ম নেই। বিদেশে থেকেও একজন পর্তুগিজ জীবনসঙ্গীর মাধ্যমে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। তবে পর্তুগিজ ভাষা জানতে হবে।
মেক্সিকো:
মেক্সিকোর নাগরিককে বিয়ে করার পর দুই বছর সেখানে থাকতে হবে। তারপরই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন হয়। ফলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া থেকে তিন বছর সময় কমানো যায়। মেক্সিকোর পাসপোর্টও বেশ শক্তিশালী। এটি দিয়ে ইউরোপের শেনজেনসহ ১৫৩টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করা যায়।
আয়ারল্যান্ড:
আইরিশ নাগরিককে বিয়ে করার তিন বছর এবং দেশটিতে এক বছর বসবাস করলে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়। যদিও বসবাসের সময়কালে উচ্চ আয়কর দিতে হতে পারে। তবে একবার আইরিশ পাসপোর্ট পেলে আপনি ইউরোপের যেকোনো জায়গায় বসবাস এবং পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।
কলম্বিয়া:
কলম্বিয়া লাতিন আমেরিকার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। কোনো কলম্বিয়ান নাগরিককে বিয়ে করলে ৫ থেকে ১০ বছরের প্রক্রিয়া কমে মাত্র দুই বছরে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। তবে আপনাকে স্প্যানিশ ভাষায় নাগরিকত্ব পরীক্ষায় পাস করতে হবে।
সুইজারল্যান্ড:
পৃথিবীর অন্যতম কাঙ্ক্ষিত এই দেশের নাগরিকত্ব পেতে একজন সুইস নাগরিকের স্বামী বা স্ত্রী পাঁচ বছর বিবাহিত জীবন কাটানোর পর নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন। এ জন্য অবশ্য জার্মান, ফরাসি বা ইতালীয় ভাষা জানতে হবে। তবে যদি বিয়ে অবস্থায় বিদেশে বাস করেন, তাহলে সময়সীমা ৬ বছরে পৌঁছাবে।
বেলিজ:
বেলিজের নাগরিককে বিয়ে করার পর সেখানে এক বছর বসবাস করার পর নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। বেলিজ পাসপোর্ট ইউকে, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিসামুক্ত যাতায়াত করা যায়। এটি একটি ইংরেজি ভাষী দেশ।
ইতালি:
ইতালীয় নাগরিকের জীবনসঙ্গী ইতালিতে বসবাস করলে দুই বছর পর এবং বিদেশে বসবাস করলে তিন বছর পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারে।
সূত্র: নোম্যাড ক্যাপিটালিস্ট








































আপনার মতামত লিখুন :