সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধে ধস। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়কের উজ্জ্বলপুরে মাটির রাস্তা ধসে গেছ। সম্প্রতি বিপুল অর্থের বরাদ্দ দিয়ে মাটি কেটে সংস্কার করার পর পরই ধসে যাওয়ার ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দ্রতে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, হাওরের বোরো ফসল রক্ষার পাশাপাশি প্রতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বাঁধে মাটি কেটে রাস্তা সংস্কার করা হয়। কিন্তু এ বছর কোনো পিআইসি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত না করে নামে মাত্র ঠিকাদারি নিয়োগ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অফিসের তত্বাবধানে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাঁধটির মাটি ফেলা ও সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু বাঁধের কাজটি গত সপ্তাহে শেষ হলেও নতুন করে পূনরায় বরাদ্দ ঢেলে আবারো বাঁধের কাজ করার পায়তারা করছে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস। যার ফলে বাঁধের পাশেই একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর সেচের জন্য ওই পুকুরের মালিককে চাপ দিয়েছিল উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান ও ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট মো. মিলন। তাদের চাপে বাধ্য হয়ে পুকুরের পানি সেচের জন্য মেশিন লাগান ওই পুকুরের মালিক মো. মিটন মিয়া। গত ২ দিন যাবত পানি সেচের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ ধসে পড়ে নতুন করে সংস্কার করা রাস্তাটি।
এ ব্যাপারে উজ্জ্বলপুরের বাসিন্দা জুবায়ের সুমন বলেন, এটা একদিকে যেমন হাওরের ফসল রক্ষা করে অন্য দিকে জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জের একমাত্র যোগাযোগ সড়ক। প্রতি বছরই এখানে সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থের বরাদ্দ দিলেও কাজ হয়না সঠিক ভাবে। গত কয়েকদিন যাবত কাজ করে শেষ হলেও আজ আবার ধসে গেলো। এতে সরকারের অনেক টাকার ক্ষতি হয়।
পুকুরের মালিক মো. মিটন মিয়া জানান, আমি আমি ৩০ হাজার টাকা দিয়ে পুকুরটি নিয়েছি। কিন্তু রাস্তাটি ধসে যাবে বিধায় পানি সেচের জন্য আমি মেশিন লাগাইনি। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের আনিস স্যার ও মিলন স্যার মিলে আমাকে খুব চাপ দিচ্ছিল আমি যেন পুকুরে মেশিন লাগাই। তাদের পিড়াপিড়িতে আমি মেশিন লাগাইছি। লাগানোর দুদিন পরেই আজ রাস্তাটি ধসে পড়েছে। তারা বলছে যে এটার দায়-দায়িত্ব তাদেরই।
এ ব্যাপারে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান বলেন, এটি একটি উপজেলার প্রধান সড়ক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নিজস্ব সড়কটিতে এবার মাটির কাজ করেছে। পুকুরের পানি সেচের কারণে মাটির বাঁধ ধসে গেছে। তবে আবারও নতুন করে মাটি দিয়ে সড়কটি সংস্কার করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, এইখানে গত মাসে ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে কাজ করা হয়েছে। কিন্তু পাশে ৪০ ফুট গভীর একটি পুকুর থাকাতে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছে বলে পুকুরের পানি সেচ দিয়ে এখানে মাটি ভরাট করা হবে। আগের বরাদ্দে হবে নাকি নতুন বরাদ্দ লাগবে জিজ্ঞেস করলে ইউএনও জানান, আগের ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ শেষ। নতুন করে উপজেলা ফান্ড থেকে আবারো বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :