ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পৌর সদরে করিমশাহ্ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মায়েদের এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির ফি ২৫০ টাকা ও ৫ম শ্রেণির প্রশংসাপত্র বাবদ ২০০ টাকা করে উত্তোলনসহ নানাহ্ দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে প্রত্যাহারের দাবী করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিভাবক রাবিয়া খাতুন ও নিপা আক্তার আলাদা আলাদাভাবে লিখিত দুইটি অভিযোগও দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরই ছাত্র ভর্তির সময় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা এবং ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্র বাবদ ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। টাকা না দিয়ে স্কুলে ভর্তি করানো হয় না। অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে স্কুলের শিক্ষকরা ‘টাকা ছাড়া যে স্কুলে ভর্তি করায় সে স্কুলে গিয়ে ভর্তি করান’ এ কথা বলে তাদের তাড়িয়ে দেন। স্কুল পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার নামেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেন এবং শিক্ষার্থীদের দিয়ে টয়লেট পরিস্কারসহ ব্যক্তিগত পারিবারিক নানাহ কাজ করান। প্রধান শিক্ষক মাসের অধিকাংশ সময়ই স্কুলে না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারীসহ মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ভুক্তভোগী লোকমা বেগম, মোমেনা বেগম, ময়না বেগম, শিরিন আক্তার, জেসমিন আক্তার, হালিমা আক্তারসহ যারা অংশগ্রহণ করেছেন তারা সবাই উপরোক্ত নানাহ অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। কারও স্বামী রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, কারও স্বামী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সরকার আমাদের ফ্রি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে সেখানে আমাদের কেন টাকা দিতে হবে?। প্রতিবাদ করলে বলে, টাকা দিতে হবে সরকার নতুন আইন করেছে, আমরা এ প্রধান শিক্ষকের প্রত্যাহারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী রাবিয়া খাতুন ও নিপা আক্তার বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমানসহ এ অভিযোগ দায়ের করি। আমরা তাকে এ স্কুল থেকে প্রত্যাহারসহ সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক খাইরুন নাহার লিপা বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই টাকা তুলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই এলাকার কাউন্সিলর ও অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি গনি চান মোকসুদ বলেন, আমার এলাকার বেশ কয়েকজন অভিভাবক ভর্তি ও প্রশংসাপত্র বাবদ টাকা নেওয়া হয়েছে এবং টাকা ছাড়া ভর্তি করা হবে না’ এই কথাও আমাকে জানান।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে আমি সম্পৃক্ত না। আমার বিরুদ্ধে এটা একটা ষড়যন্ত্র।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কর্মদিবসের বিরুদ্ধে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত রির্পোট এর উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :