রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় টাকার বিনিময়ে প্রাকটিক্যাল পরিক্ষার নম্বর দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কাউনিয়া দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ তোজাম্মেল হক এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট হতে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় ২৫ নাম্বার দেওয়ার জন্য ২ হাজার করে টাকা গ্রহণের ভিডিও এখন ভাইরাল। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পঠিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বৃহস্পতিবার কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের পাশেই অবস্থিত কাউনিয়া দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা জানিয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে তার সামনে রাখা একটি খাতার ভেতরে রাখছেন এবং সেখানে তাদের রোল নম্বার লিখে রাখছেন।
অভিযোগকারী ছাত্রছাত্রীরা আরও জানান, ইতোপূর্বে পরীক্ষাগুলোতেও তিনি ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহারিকে বেশি নম্বর দেওয়ার কথা বলে টাকা গ্রহণ করেছেন।
তিনি গরিব, মেধাবী কিংবা মধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রী কিছুই বোঝেন না। সবার কাছে থেকেই টাকা নেন। টাকা ছাড়া তিনি প্র্যাকটিক্যালের কোন নম্বর প্রদান না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক রংপুর নগরীতে থেকে বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। তিনি উপজেলায় বসবাস করেন না। পূর্বেও প্রধান শিক্ষক এমন কিছু অনিয়ম করেছেন, যা কর্তৃপক্ষ জানেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জেনেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভিডিওটি আমাকে ফাঁসানোর জন্য করা হয়েছে। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেননি।
এ ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানী কমান্ডার সরদার আব্দুল হাকিম জানান, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও টাকার বিনিময়ে নম্বার দেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এবারের অভিযোগের কথা জানতে পেরেছি। বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়েছি। স্কুলের সভাপতি হিসেবে ইউএনও মহোদয় যদি আমার কাছে কোন সহযোগিতা চান তাহলে অবশ্যই করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিদুল হক জানান, এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। এরপরেও ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :