নারী ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১ হাজার রান করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন ভারতের স্মৃতি মান্ধানা। তারকা ব্যাটারের এমন কীর্তির ম্যাচে রানের পাহাড় গড়েও জিততে পারেনি ভারতকে। নারী বিশ্বকাপের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৩০ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করিয়েও ৩ উইকেটে হেরেছে টিম ইন্ডিয়া।
একদিনের ক্রিকেটে রান তাড়া করার বিশ্বরেকর্ড গড়ে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। এক ওভার বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। একা হাতে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন অজি অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। ১০৭ বলে ১৪২ রান করেন তিনি। আদর্শ ক্যাপটেনস নক যাকে বলে! বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের কারিগর অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড। ৪০ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন তিনি।
রবিবার বিশাখাপত্তনমে টসে জিতে ভারতকে প্রথম ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। শুরুটা কিছুটা সাবধানী হলেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে ব্যাট হাতে আগ্রাসী রূপে হাজির হন দুই ভারতীয় ওপেনার প্রতিকা রাওয়াল ও স্মৃতি মান্ধানা। রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন তারা। তাদের ১৫৫ রানের জুটি ভাঙেন মোলিনেয়াক্স। ৬৬ বলে ৮০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন স্মৃতি। তার ইনিংস সাজানো ৯টি চার, ৩টি বিশাল ছক্কায়। এই ইনিংস খেলার পথে এ বছর ১ হাজার রান পূর্ণ করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।
বিশ্বের প্রথম নারী ব্যাটার হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মান্ধানা। এ বছর এখন পর্যন্ত ১৮ ম্যাচে ১০৬২ রান করেছেন তিনি। চলতি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে এক পঞ্জিকাবর্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন মান্ধানা। ১৭ ম্যাচে ৯৮২ রান করা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটার বেলিন্ডা ক্লার্কের রেকর্ড দখলে নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালে এক পঞ্জিকাবর্ষে ৯৭০ রান করেছিলেন ক্লার্ক।
ভারতের রান যখন ১৯২, দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয়। ৯৬ বলে ৭৫ রানে আরেক ওপানার প্রতিকাকে ফেরান সাদারল্যান্ড। অন্যদিকে, নিজের ক্যারিয়ারে হাজার রান করলেন হার্লিন দেওল। ২২ বলে ৩৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। ফের ব্যর্থ হন ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত। ১৭ বলে ২২ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৭ বল বাকি থাকতেই ৩৩০ রানে অলআউট হয় ভারত। অজি অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি ১০৭ বলে ১৪২ রান করেন।
যে কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটেই ৩৩০ রান কম নয়। যদিও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা শুরুতেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন ম্যাচ জিততেই মাঠে নেমেছেন তারা। ওপেনিং জুটিতে বড় রান তোলেন হিলি এবং লিচফিল্ড। পাওয়ার প্লের পর রান তোলার গতি কিছুটা কমে আসে। প্রথম ১০ ওভারে ৮২ রান উঠলেও পরের ২০ ওভারে ১০০-র সামান্য বেশি রান করে অস্ট্রেলিয়া।
হিলিকে শুরুতে সঙ্গত দেন ফোব লিচফিল্ড (৪০)। তিনি আউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া ধাক্কা খায় চোটের জন্য এলিস পেরি উঠে যাওয়ায়। যদিও তিনি আবার পরে ব্যাট করতে নামেন। পেরি উঠে যাওয়ার পর দু’ওভারে ফিরে যান বেথ মুনি (৪) এবং অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (০)।
বিশেষ করে মুনির ফিরে যাওয়াটা অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিরাট ধাক্কা ছিল। কিন্তু একা হিলিই জিতে দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। সঙ্গে ছিলেন অ্যাশলে গার্ডনার। দু’জনে চতুর্থ উইকেটে ৯৫ রান যোগ করেন। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার জয় আর আটকাতে পারেনি ভারত।
আপনার মতামত লিখুন :