Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কৈলাশটিলায় বন্ধ কূপে নতুন করে মিলল গ্যাস


দৈনিক পরিবার | স্টাফ রিপোর্টার নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম কৈলাশটিলায় বন্ধ কূপে নতুন করে মিলল গ্যাস

দেশের পুরোনো কূপগুলো ২০২৩ সাল থেকে নতুন করে ওয়ার্কওভার শুরু হয়। এরমধ্যে সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন ১৪টি কূপের ওয়ার্কওভার চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে কৈলাশটিলার ১ নম্বর কূপসহ ৭টি কূপের ওয়ার্কওভার সম্পন্ন হয়েছে এবং সবগুলোতেই গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে। ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে নতুন করে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে বন্ধ থাকা সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ডের ১ নম্বর কূপে। এই কূপ থেকে প্রতিদিন সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সঞ্চালন শুরু হতে পারে। কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ফররুখ আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ডের ১ নম্বর কূপ থেকে একবার বিরতি দিয়ে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলিত হয়। এর আগে ১৯৬১ সালে গ্যাসের সন্ধান মেলে। ২০১৯ সাল থেকে কূপটি বন্ধ ছিল। ওয়ার্কওভার করে আবারো গ্যাস মিলেছে এবং আজ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ হতে পারে।
ফররুখ আহমদ আরও বলেন, ইতোমধ্যে কৈলাশ টিলার ২, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর কূপ থেকে মোট ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে। এবার সরবরাহের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।
প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কৈলাশটিলার ১ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শেষে গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে। এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। আজকালের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হবে।
সিলেট গ্যাসফিল্ডের তথ্যমতে, প্রায় ৪ মাস আগে কৈলাশটিলার ১ নম্বর কূপ ওয়ার্কওভার শুরু করে দেশীয় তেল-গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। ওয়ার্কওভারকালে প্রায় ২২ হাজার ফুট গভীরে গ্যাসের সন্ধান মেলে। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুর গ্যাসফিল্ডের ৩ নম্বর পুরোনো কূপ থেকে নতুন করে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়।
কৈলাশটিলাসহ সিলেটের কূপগুলো প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর সিলেট গ্যাসফিল্ডের ৭ নম্বর কূপে খননকাজ শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। হরিপুরে ৭ নম্বর কূপ থেকে দৈনিক ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামূলকভাবে উত্তোলন হচ্ছে। কূপের ১ হাজার ২০০ মিটার গভীরতায় এ গ্যাস পাওয়া গেছে। ওই বছরের ২৪ মে খননকাজ শেষে সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ডে ৮ নম্বর কূপে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার যায়। কূপের ৩ হাজার ৪৪০ থেকে ৫৫ হাজার ফুট গভীরতায় গ্যাস পাওয়া যায়।
সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের আওতাধীন কূপগুলোতে চলমান আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ হবে। খনন চলমান থাকা অন্য সকল কূপে আশানুরূপ গ্যাস পাওয়া গেলে শুধুমাত্র এই কোম্পানি থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে ২৫০ মিলিয়ন গ্যাস যুক্ত করা সম্ভব, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকটি অনুসন্ধান কূপ ও ওয়ার্কওভারের কাজ চলছে।
গত বছরের ২৭ জানুয়ারি সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুরের ২ নম্বর কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট।
এ ছাড়া ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে পুরানো গ্যাসফিল্ড হরিপুরের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাসফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)। ওই বছরের ২২ নভেম্বর সিলেটের কৈলাশটিলায় পরিত্যক্ত ২ নম্বর কুপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এখান থেকে দৈনিক ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।
সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে। এরপর আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসফিল্ড। বর্তমানে এসজিএফএল-এর আওতায় পাঁচটি গ্যাসফিল্ড রয়েছে। সেগুলো হলো হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশীদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।

Side banner