রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব, ডাক্তারদের কর্মস্থলে না থাকা, সঠিক সময়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না আসা, ডাক্তারদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে বিঘ্ন হচ্ছে সিজারিয়ান কার্যক্রম থেকে শুরু করে সার্বিক চিকিৎসা সেবা। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঔষধ না পেয়ে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি তো নিত্য নৈমিতিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
নিয়ম ভঙ্গ করে স্থানীয় লোককে ধুপীর কাজ না দিয়ে বাইরের জেলার লোককে ধোপার কাজ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে কাগজে কলমে যে টুকু জনবল রয়েছে তারও কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বিশেষ করে ভোগান্তিতে পড়ছেন মহিলা আর শিশু রোগিরা। গত বছর ঢাক ঢোল পিটিয়ে গর্ভবতী মহিলাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনামূল্যে সিজার করার ঘোষণার শুরুতে কয়েকজনের সিজার করলেও বর্তমানে জুনিয়র কনসালন্টেন এ্যানেসথেসিয়ার ডাক্তার সুপ্রীতি সাহা শারীরিক ভাবে অসুস্থতা দেখিয়ে সিজারিয়ান রোগীদের অজ্ঞান করার কাজ বন্ধ রাখায় সিজার করতে পাচ্ছেন না গাইনী সার্জন ডা: সিনথিয়া।
উপজেলার সাহাবাজ গ্রামের গর্ভবতী শারমিন বেগম নামের এক রোগীর বড় বোন শাহানাজ পারভীন বলেন, তার বোনের ডেলিভারীর ব্যথা উঠলে ডা: সিনথিয়ার পরামর্শে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করি। ভর্তির পরের দিন তার বোনের সিজার করার কথা থাকলেও এ্যানেসথেসিয়ার ডা: সুপ্রীতি সাহা অজ্ঞান করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণে সিজারের ডাক্তার আর সিজার করতে না পারায় তার বোনকে রংপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে সিজার করানো হয়েছে। এতে প্রায় দরিদ্র রোগীর পরিবারকে ২০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। এছাড়াও কোন ধরনের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে কর্তৃপক্ষ বাইরের জেলার লোককে ধুপীর কাজ দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: সাদিকাতুল তাহিরিণ কাউনিয়ায় যোগদান করার পর থেকে কর্মস্থলে অনিয়মিত হওয়ায় অন্যান্য কর্মচারী বা ডাক্তারগণ যে যার মত করে অফিসিয়াল কার্যক্রম চালাচ্ছেন ।
বালাপাড়া ইউপি সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা সেবার বেহাল অবস্থা। ময়লা বেডে রোগীদের রাত্রি যাপন, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, স্থানীয় প্রকৃত লন্ডী ও ব্যবসায়ীকে ধুপী হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় ধুপী কে কাজ না দিয়ে বাইরের জেলার ধুপীকে কাজ দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাদিকাতুল তাহিরিণ জানান, আমাদের জনবল কম থাকায় রোগীদের সেবায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। আমাদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও কম রয়েছে। এজন্য আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্র কিছুটা অপরিষ্কার রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেছি। আশা করছি খুব দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক বলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নানা সমস্যার কথা জেনেছি। জেলা সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে বিষয় গুলো তুলে ধরব।
আপনার মতামত লিখুন :