উপস্থাপক একটি অনুষ্ঠানের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হয়। তিনিই পারেন একটি অনুষ্ঠানকে সুন্দর, নির্ভুল ও সাফল্যমণ্ডিত করে তুলতে। অনুষ্ঠানটি কোথায় হবে, অতিথি হিসেবে কারা কারা থাকবেন, আলোচনার বিষয় কী এবং অনুষ্ঠানটি কয় পর্বে বিভক্ত। এসব তথ্য আগে থেকে আয়োজকদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে নিজের পোশাক-আশাক থাকতে হবে মার্জিত ও রুচিসম্মত। সব সময় মুখে একটি হাসি ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কখনও যেন চেহারার মধ্যে বিরুক্তিরেখা ফোটে না ওঠে।
অডিটোরিয়ামে উপস্থিত হওয়ার পর অনুষ্ঠানের সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিসহ সকল আলোচকদের পুরো নাম এবং পদবী খাতায় নোট করতে হবে। আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকলে কখন ঘোষণা দিতে হবে, অনুষ্ঠানটি কখন শেষ করতে হবে, এসব বিষয়াদি আয়োজকদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। এছাড়া নিজের কোনো সুপরামর্শ থাকলে আয়োজকদের প্রস্তাব দিতে হবে, এটি রাখা না রাখা তাদের ব্যাপার।
আয়োজকদের অনুমতি নিয়ে এভাবে শুরু করতে হবে, সম্মানিত উপস্থিতি এখনই আমাদের অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। আজ আমাদের আলোচনার বিষয়- শেরেবাংলার কর্মময় জীবন ও পদক প্রদান অনুষ্ঠান। এই শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন অনুষ্ঠানের আয়োজক কবি ও রম্যলেখক শাহজাহান আবদালী এবং প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে আসন গ্রহণ করবেন ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক মন্ত্রী, স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রের রচয়িতা ও সংবিধানের প্রণেতা ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে মঞ্চে আসন গ্রহণ করবেন ভাষাবিদ, অধ্যাপক ড. হায়াৎ মামুদ। তারপর একে একে সব বিশেষ অতিথির পদ-পদবীসহ পুরো নাম ঘোষণা দেওয়ার পর বলতে হবে, এখন মাননীয় সভাপতিকে বিনীত অনুরোধ করছি অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে আসন গ্রহণ করার জন্য। সভাপতি অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে আসন গ্রহণ করার পর অতিথিদের দিকে তাকিয়ে বলতে হবে, ধন্যবাদ সভাপতিসহ সকল অতিথিকে। তারপর বলতে হবে, মাননীয় সভাপতির অনুমতিক্রমে আমি অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করতে চাই? সভাপতি মাথা নেড়ে অথবা হাত উঁচিয়ে হ্যা-সূচক ইংগিত করার সাথে সাথে সভাপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলোচনার দিকে এগোতে হবে। কীসের ওপর অনুষ্ঠান, সেই বিষয়টি পাঁচ মিনিটের মধ্যে উপস্থিত সবাইকে জানান দিতে হবে। তারপর দর্শক সারি থেকে ক্রমান্বয়ে আলোচকের পুরো নাম ও পদবীসহ এভাবে বলতে হবে, সম্মানিত সুধি, এখন বক্তব্য রাখবেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক এডভোকেট রুহুল আমিন খান। তাকে মঞ্চে এসে বক্তব্য রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বলতে হবে, ধন্যবাদ এডভোকেট রুহুল আমিন খানকে তাঁর মূল্যবান বক্তব্য উপহার দেওয়ার জন্য। এখন বক্তব্য রাখবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাকিল আহমেদ। তাকে আহ্বান করছি মঞ্চে এসে বক্তব্য রাখার জন্য। তার ক্ষেত্রে আহ্বান শব্দটি ব্যবহার করতে বলছি এ কারণে যে, বয়সে সে সব অতিথির চেয়ে ছোট। সুতরাং ছোটদের ক্ষেত্রে আহ্বান এবং বড়দের বেলায় অনুরোধ বললে শিষ্টাচার ও সভ্যনীতির বিকাশ ঘটে। এদেশের অনেক উপস্থাপক বলে থাকেন যে, এখন মূল্যবান বক্তব্য রাখবেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক গাজী রুহুল আমিন সুধারামী। এ কথাটি মোটেও বলা উচিত নয়। কারণ, বক্তব্য দেওয়ার পর মূল্যায়িত হবে তিনি কতটুকু মূল্যবান বক্তব্য রাখতে পেরেছেন। তাঁর বক্তব্য গঠনমূলক হলে বলতে হবে, ধন্যবাদ গাজী রুহুল আমিন সুধারামীকে তাঁর মূল্যবান বক্তব্য উপহার দেয়ার জন্য।
সময়ের তুলনায় বক্তার সংখ্যা বেশি হলে সেক্ষেত্রে আয়োজক কিংবা সভাপতির অনুমতি নিয়ে আগত বক্তাকে বলতে হবে, আপনার সময় ৩ মিঃ, কিংবা ৫ মিঃ। দর্শক সারি থেকে আলোচকদের বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর মঞ্চের সকল বিশেষ অতিথিদের বক্তৃতার সুযোগ দিয়ে প্রধান অতিথির নাম ঘোষণা করতে হবে। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সভাপতিকে ভাষণ দেওয়ার জন্য ঘোষণা দিয়ে বলতে হবে, এখন আমরা অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এখন বক্তব্য রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি অনুষ্ঠানের সভাপতি কবি ও রম্যলেখক শাহজাহান আবদালীকে। তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যাবে আজকের আলোচনা পর্বের আনুষ্ঠানিকতা।
প্রতি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত রাজধানীর কমলাপুর পল্লীকবি জসীম উদদীনের বাড়িতে এবং একই দিন মাগরিবের নামাজের পর রাজধানীর মোহাম্মদপুর শেখেরটেক ১০, মসজিদ মার্কেট দোতলায় বক্তৃতা ক্লাস চলে ।
শাহজাহান আবদালী
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক
বক্তৃতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৭৩৬৭১২৩৭৮
০১৮২৪২৯২০৪০
আপনার মতামত লিখুন :