বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় হিমাগার না থাকার মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিন ফসলি জমিতে হিমাগার নির্মাণের কাজ শুরু করেছে বুশরা গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নির্মাণাধীন হিমাগারের সীমানার মধ্যে পৃথক তিনটি দাগে প্রায় দেড় বিঘা সরকারি জমি থাকা এবং ওই গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে তার অপর একটি প্রতিষ্ঠানের পাশে থাকা ঢ্যাল কুমারী নামক একটি খোলা মন্দিরের রাস্তায় প্রাচীর নির্মাণ করে আসা যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।
ওই মন্দিরে গত প্রায় ২০ বছর ধরে পুজা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ওই মন্দিরের সেবাইত পাগলপ্রায় হয়ে ঘুওে বেড়ায় জানিয়েছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহারের কলাবাগান (কামারকুড়ি মৌজা) এলাকায় হাফেজ বেলাল হোসেন নামের এক চাল ব্যবসায়ী প্রায় ২৫ বছর পুর্বে সুন্দরী চালকল নামের ছোট পরিসরের একটি হাসকিং চালকল নির্মাণ করেন। এরপর সুন্দরী অটো, বুশরা অটো, নিউ বুশরা অটো এবং কুবা অটো রাইস মিল নির্মাণ করে। এরপর উদ্যোগ নেয় হিমাগার নির্মাণ প্রকল্প। এজন্য তিনি প্রায় নয় বিঘা তিন ফসলি জমি কিনে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ হলে উপজেলা কৃষি বিভাগ সরেজমিন তদন্ত করে। তদন্তে তিন ফসলি জমি নষ্ট করা সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতা মেলে। এর প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এতে করে বেকাদায় পড়ে মালিক হাফেজ হাজী বেলাল হোসেন। তিনি বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবরে মেসার্স বুশরা স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোরের জন্য জমি ক্রয় ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ অনুমোদন দেওয়ার আবেদন করে। আবেদনে আদমদীঘি উপজেলায় কোন হিমাগার নাই বলে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে। উপজেলার বশিপুর মৌজায় মেসার্স বিএইচ স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোর নামক হিমাগার রয়েছে। উপজেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আলু আবাদ না হবার কারণে ওই হিমাগারটি আলুর ভরা মৌসুমেও খালি থাকে অনেকাংশ। এদিকে হিমাগার প্রকল্পে পৃথক তিন দাগের সরকারি জমির মধ্যে একটি দাগের ২৮ শতাংশ আবাদি জমি বৈধ কাগজাদি ছাড়াই একের পর পর এক হাত বদল করে কোটি টাকার বাণিজ্য করার ঘটনা এলাকায় উপেন-সিক্রেট। এটির সবশেষ ক্রেতা বুশরা গ্রুপের মালিক।
এবিষয়ে সত্যতা জানার জন্য বুশরা গ্রুপের মালিক হাফেজ হাজী মো. বেলাল হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এলাকাবাসী তিন ফসলি জমিতে হিমাগার সহ যে কোন ভারী অবকাঠামো নির্মাণ অনুমোদন না করা এবং মন্দিরে যাতায়াতের রাস্তা খুলে দেওয়ার জন্য বগুড়া জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী এবং সনাতন ধর্মাম্বলীরা।
আপনার মতামত লিখুন :