Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজাখালী খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন


দৈনিক পরিবার | মশিউর রহমান রাসেল এপ্রিল ১৭, ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম রাজাখালী খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

নলছিটি-বাকেরগঞ্জ সংযুক্ত করতে জোলাখালি সেতু নির্মাণের দাবিতে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের রাজাখালী (জোলাখালি) খেয়াঘাট এলাকায় বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে  মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী।
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জোলাখালি এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ইউনিয়ন এর পশ্চিম চরাদি এবং খাসের হাট বাজার  এলাকার সংযোগ স্থাপনের জন্য জোলাখালি এলাকায় খায়রাবাত নদীতে একটি সেতু নির্মানের দাবি জানিয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।  
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন এর সীমান্তবর্তী একটি এলাকা বাকেরগঞ্জের চরাদি এবং খাসের হাট, খায়রাবাদ নদী যেটিকে এই উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। সেখানে অন্তত ১০-১৫ হাজার লোকের বসবাস। কিন্তু চিকিৎসার  জন্য তাদের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বৈঠা বাওয়া একটি মাত্র নৌকা। তাও জোলাখালি খেয়াঘাটে সন্ধ্যা ৭ টার পর বন্ধ, আর খাসের হাট খেয়া ১০ টার পর বন্ধ হয়ে যায়। নদী বেষ্ঠিত এবং বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়ক এর সাথে সংযুক্ত না হওয়ার কারণে মালামাল বা রোগী পরিবহনে তেমন গাড়িও চলাচলের ব্যবস্থা নেই। বরিশাল নিতে হলেও তাদের একমাত্র পথ রানিরহাট ব্রিজ হয়ে যাওয়া, কিন্তু ততক্ষণে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে যায়। একটি সেতুর অভাবে তাদেরকে প্রায় পনের কিলোমিটার বাড়তি পথ ঘুরতে হয়, যারফলে মুমূর্ষু অবস্থায় রোগীদের বাঁচানোও সম্ভব হয় না। এছাড়াও এই বিচ্ছিন্ন এলাকাটিতে ব্যবসা বাণিজ্যে অন্যতম সমস্যা পণ্য পরিবহনে, যদি ছোট্ট এই সেতুটি নির্মাণ করা হয় তাহলে পণ্য পরিবহনে ভোগান্তি লাঘব হলে ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ হবে। এছাড়াও চরাদি থেকে প্রায় সকল ছাত্র ছাত্রীদের দপদপিয়া স্কুল এবং কলেজে পড়ালেখা করতে খেয়া পার হয়ে আসতে হয়। যাদের সব সময়ই অনেক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়, বিশেষ করে বর্ষাকালে সেই ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। অনেক সময়ই পা পিছলে পরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, বই খাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মানববন্ধনে নলছিটির বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী বালী তূর্য বলেন, চরাদী এলাকাটি বাকেরগঞ্জের অধীনে হলেও তাদের ওঠাবসা, পড়াশোনা সব নলছিটির দপদপিয়ার সাথে। কিন্তু ছোট একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন এই জনপদের মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে এবং ভোগান্তিতে রয়েছেন। এদের বাচ্চাদের পড়ালেখায় ঝুঁকি, চিকিৎসা করাতে ঝুঁকি, যাতায়াতে ঝুঁকি, এত ঝুঁকি নিয়ে তারা কিভাবে মূল ধারায় সংযুক্ত হবে। যদি এখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয় তাহলে এটি বরিশাল বিভাগের এবং মূল মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেলেই তাদের ব্যাপক বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। কৃষি এবং শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হবে, এতে স্থানীয়দের জীবনধারার ব্যাপক উন্নয়ন হবে। বর্তমান সরকার, উন্নয়নের সরকার, তাই আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে দ্রুতই এই সমস্যাটির সমাধান করা হয়।
এছাড়াও চরাদি এলাকার সমাজসেবক মো. ফিরোজ আলম বলেন, ছোট বেলা থেকেই এই একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে জীবন কাটছে আমাদের। বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার জন্য বরিশালে নিতেও ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। একপ্রকার বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হওয়ায় আমরা বিভাগীয় শহর এবং মহাসড়কের পাশে থেকেও সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছি। আমরা এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন চরাদী এলাকার জুয়েল সিকদার, কামাল সিকদার, তোফায়েল ফকির, জাকির সিকদার, রুবেল মৃধা, হুমায়ুন সিকদার, কবির হোসেন মাঝী।
মানববন্ধন শেষে বরিশাল জেলা প্রশাসক ও বরিশাল ৬ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য বরাবর স্মারক লিপিও পেশ করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে প্রায় তিন শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। সরেজমিনে জোলাখালি খেয়াঘাটে এবং খাসেরহাট খেয়াঘাট ঘুরে দেখে স্থানীয়দের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের দূর্ভোগের করুণ চিত্র ফুটে ওঠে। এই সেতুটি ঝালকাঠি ২ এবং বরিশাল ৬ দুই সংসদীয় আসনের সংযোগ হওয়ায় উভয় সংসদ সদস্যই জনগণের এই প্রাণের দাবিটি বাস্তবায়ন করতে যথাযথ চেষ্টা করবেন বলে প্রত্যাশা সকলের।

Side banner