ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ খারকিভের প্রধান শহর কুপিয়ানস্কের দখল নিয়েছে অভিযানরত রুশ বাহিনী। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পশ্চিাঞ্চলীয় শাখার শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল সের্গেই কুজোভলেভ গতকাল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার পুতিনকে কুজোভলেভ বলেন, “রুশ সেনারা কুপিয়ানস্ক শহরকে মুক্ত করেছে। এই শহরটি ছিল ইউক্রেনীয় বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় দুর্গ এবং প্রধান ঘাঁটি।”
কুপিয়ানস্ক রুশ বাহিনীর দখলে চলে যাওয়ার সংবাদটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন কিয়েভ ওয়াশিংটনের কাছ থেকে যুদ্ধ শেষের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব পেয়েছে। ইউক্রেনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ ব্যাপারে এএফপিকে বলেছেন, “আমরা চুক্তির খসড়া পড়েছি এবং আমাদের মনে হয়েছে, (যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে) রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন দখলকৃত ভূখণ্ড নিজেদের বলে যে দাবি জানিয়ে আসছে, এই খসড়া তারই প্রতিধ্বনি।”
উল্লেখ্য, কৃষ্ণ সাগরে অবস্থিত ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ২০১৪ সাগরে দখল করে নিজেদের মানচিত্রভুক্ত করে রাশিয়া। এর আগ পর্যন্ত এটি ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছিল। পরে ২০১৫ সালে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে মেনে নেয় ইউক্রেন এবং এ বিষয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেয়।
কিন্তু পরে এই শর্ত না মেনে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবির শুরু করে ইউক্রেন। এই নিয়ে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও চলছে। গত প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেনের দনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন— এই চার প্রদেশ নিজেদের মানচিত্রভুক্ত করেছে রাশিয়া। এই প্রদেশগুলোর সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডের এক পঞ্চমাংশ।
এর মধ্যে অবশ্য কয়েক বার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সেসব সফল হয়নি। কারণ রাশিয়ার শর্ত দিয়েছে যে ক্রিমিয়া ও ইউক্রেনের যে চার প্রদেশ দখল করেছে রাশিয়া, সেগুলোকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে ইউক্রেনকে। অপরদিকে ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া যদি ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোর দখল ছেড়ে দিতে রাজি হয়, কেবল তাহলেই যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
সূত্র : এএফপি








































আপনার মতামত লিখুন :