Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসিকে জামায়াতের ১৮ দফা দাবি


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ০৫:০০ পিএম নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসিকে জামায়াতের ১৮ দফা দাবি

জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৈঠকে জামায়াতের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের কাছে ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতে প্রতিনিধি দল। সভা শেষে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান। 
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা ১৮ দফা দাবি জানিয়েছি। বৈঠকে দীর্ঘ সময় ধরে দাবিগুলোর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয় এবং নির্বাচন কমিশনাররা তাদের পদক্ষেপ, চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন। তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। জামায়াত নেতারা বৈঠকের পরিবেশকে ‘খোলামেলা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ’ এবং ইসির আন্তরিক প্রচেষ্টায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগেই আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোট অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে জামায়াত। জুলাই মাসে তৈরি জাতীয় সনদে বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোকে পরিবর্তন করে যে সংস্কারগুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে, সে সম্পর্কে জাতিকে জানতে হবে। এছাড়া একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে নির্বাচন কেন্দ্রে সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে, দু-চারটা কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হলে গণভোটের দশা কী হবে—এমন টেকনিক্যাল সমস্যা আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ইসিকে অবশ্যই জুলাই সনদ ও সংস্কারের বিষয়গুলো পাবলিক করতে হবে যাতে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। গণভোট আয়োজনে ইসির পক্ষ থেকে কোনো চ্যালেঞ্জ বা অক্ষমতার কথা জানানো হয়নি বলে জামায়াত নেতারা জানান। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর সর্বশেষ সংশোধনে জোটবদ্ধ প্রত্যেক দলকে স্ব-স্ব নির্ধারিত প্রতীকে ভোট করতে হবে বলে যে বিধান অনুমোদিত হয়েছে, জামায়াত তার পক্ষে রয়েছে। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব এবং উপদেষ্টা পরিষদের সংশোধিত সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।
সম্প্রতি একটি দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে এসে এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো এবং তা পরিবর্তনের দাবি তোলার বিষয়টিকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ মনে করে জামায়াত।
দলটির অভিযোগ, জেন্টলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট-এর মাধ্যমে আরপিও সংশোধনীর পরিবর্তনের প্রচেষ্টা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘনের খারাপ উদাহরণ। জামায়াত এই আপত্তি দেওয়াকে অ্যালার্মিং এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখছে। তারা এই সংশোধিত বিধান বহাল রাখার দাবি করেছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা (টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সাপেক্ষে), সব রাজনৈতিক দল যেন সমান অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্মচারী (প্রিজাইডিং, পোলিং, আনসার) এবং প্রবাসীরা যেন পোস্টাল ব্যালট বা সহজ প্রক্রিয়ায় ভোট দিতে পারে, ইলেকশন অবজারভার সংস্থা বা সংগঠনের রাজনৈতিক কানেকশন যাচাই করে নিযুক্ত করা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে জামায়াত এটিকে দুঃখজনক এবং অরাজনৈতিক চিন্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। জামায়াত দাবি করেছে যে তারা যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বলেছে তার কোনো একটার মালিকানার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এটিকে ব্যাড ট্রেডিশন আখ্যা দিয়ে বলেছে, পাল্টা বিবৃতি বা তালিকা দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়।

Side banner