Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২২, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গুমের অভিযোগে করা দুটি মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আর গত বছরের ১৮ ও ১৯ জুলাই রামপুরায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে করা মামলায় শুনানির জন্য ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
যাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিকে, শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আসামিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে আনলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এখন আসামিদের কোন কারাগারে রাখা হবে তা কারা কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।
এদিন সকাল সোয়া ৭টায় কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে করে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সাড়ে ৭টায় প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
গত ৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধী ঘরানার লোকদের গুম করে র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) গোপন সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে শুনানি শেষে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পাশাপাশি আজকের মধ্যে হাজিরের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল।
একই দিন জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে গুমের অভিযোগে আরেকটি মামলায় হাসিনা-তারিকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। তাদের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করা হয়। এছাড়া জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবির কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। সবমিলিয়ে এ তিন মামলায় ২৫ সেনা কর্মকর্তা আসামি হয়েছেন। ৯ অক্টোবর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে সেনা সদর থেকে জানানো হয়।  
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর সেটি আমলে নেওয়ার জন্য শুনানি শুরু হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ আজকের মধ্যে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Side banner