খুলনায় শুরু হয়েছে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি। মঙ্গলবার সকালে নগরীর প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সেন্ট যোসেফস স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটির কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে টিকা নিচ্ছে।
কেসিসির এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, এই স্কুলের প্রায় ১,২০০ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) থেকে তিন দিনব্যাপী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টিকা নেওয়ার পর শিশুরা যেন রৌদ্রে ঘোরাঘুরি না করে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়— সেটি অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। জ্বর বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
প্রতিদিনের টিকাদানের তথ্য সার্ভারে আপলোড করা হয়। ফলে টিকা নেওয়ার পরদিনই www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে সার্টিফিকেট ডাউনলোড করা সম্ভব।
এর আগে রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে খুলনা জেলা স্কুলের অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ এর। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার।
প্রধান অতিথি বলেন, টাইফয়েড টিকা হালাল, নিরাপদ ও কার্যকরী। ইপিআই-এর আওতায় দেওয়া টিকাগুলো বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে সুস্থ ও সবল রাখতে টিকার বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, টাইফয়েড একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এ রোগ নির্মূলে সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করছে। গণমাধ্যমকর্মীরাও এই টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। কোনো শিশু যেন টিকাদান ক্যাম্পেইনে বাদ না পড়ে, সেজন্য প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে এবং গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা দিতে হবে।
বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, জাতীয় পর্যায়ে প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টাইফয়েড টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি পর্যায়ে ৪৩ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
খুলনার ১০ জেলায় ২৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ১৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩৩টি কমিউনিটি কেন্দ্রে এই ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে।
১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে দুই ধাপে
১২-৩০ অক্টোবর: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে
১-১৩ নভেম্বর: কমিউনিটি পর্যায়ে নিয়মিত ও স্থায়ী কেন্দ্রে
নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রতিটি শিশুকে এক ডোজ টিকা দেওয়া হবে। জন্মনিবন্ধনের ১৭-অঙ্কের তথ্য দিয়ে াধীবঢ়র.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। যাদের জন্মনিবন্ধন সনদ নেই, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :