Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

ফেরত গেল হাওড়ের জলবায়ু সহনশীল প্রকল্প


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০৪:১১ পিএম ফেরত গেল হাওড়ের জলবায়ু সহনশীল প্রকল্প

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এক হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে হাওর ও খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে জলবায়ু সহনশীল জীবনমান গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রস্তাবিত ‘জলবায়ু সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প’ (সিআরএলইপি) একনেক সভায় অনুমোদন পায়নি।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। অসুস্থ্য থাকায় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেননি পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, একনেক সভায় মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে এক হাজার ৮৮৫ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ৫৩ কোটি দুই লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে ৫০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প তিনটি, সংশোধিত প্রকল্প সাতটি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির তিনটি প্রকল্প রয়েছে।
একনেক সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রকল্পটির কাঠামো নিয়ে আপত্তি জানান এবং বলেন, জলবায়ু সহনশীলতার নামে এই প্রকল্পে মূল গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ইট-পাথর ও অবকাঠামো নির্মাণে, কিন্তু টেকসই জীবিকা উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসের বিষয়টি প্রায় উপেক্ষিত। তার এই আপত্তির পর সভায় সিদ্ধান্ত হয়— হাওর অঞ্চলের প্রকৃত চাহিদা অনুযায়ী অবকাঠামো নির্মাণের অংশ কমিয়ে প্রকল্পটি পুনর্গঠন করে পুনরায় একনেকে উপস্থাপন করতে হবে।
এর আগে গণমাধ্যমে ‘জলবায়ু সহনশীলতার আড়ালে ইট-পাথরের প্রকল্প’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয়, এটি প্রকল্পের নামে জলবায়ু সহনশীলতার কথা থাকলেও বাস্তবে এটি আরেকটি ‘ইট-পাথরের’ উন্নয়ন উদ্যোগ। হাওর এলাকায় অতিরিক্ত রাস্তা বা ভবন নির্মাণ দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশবিদদের উদ্বেগের কারণ। বন্যা মৌসুমে পানি নামা ও ওঠার স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়, ফলে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মাছের প্রজননও ব্যাহত হয়।
একনেক সভা সূত্রে আরও জানা গেছে, জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পটি ফেরত পাঠানো হলেও এটি বাতিল করা হয়নি। অবকাঠামো নির্ভর কাঠামো পরিবর্তন করে স্থানীয় মানুষের জীবিকা ও প্রশিক্ষণ অংশ জোরদার করার পর প্রকল্পটি পুনরায় একনেকে উপস্থাপন করা যাবে। পরিবেশ উপদেষ্টার মতে, টেকসই উন্নয়নের পথে যেতে হলে প্রকৃতি ধ্বংস নয়, প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবিকা গড়ে তুলতে হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- কৃষি, পল্লী অবকাঠামো, সড়ক, রেল, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতের উদ্যোগ। 
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হলো কক্সবাজারে কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা রূপান্তরের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ, গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা টেকসইকরণ প্রকল্প, খুলনা বিভাগের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ সড়ক ও ফুটপাত উন্নয়ন, উত্তরা লেক উন্নয়ন প্রকল্প, ক্যানবেরায় বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন নির্মাণ, কিশোরগঞ্জ থেকে পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর টোক সড়ক উন্নয়ন, বিএসটিআই’র পরীক্ষাগার সম্প্রসারণ, ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিট পুনঃশক্তিকরণ, পাবনার মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইনস্টিটিউটে রূপান্তর এবং রেলওয়ের পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন।

Side banner