Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

কম খরচে ঘুরে আসুন থাইল্যাণ্ড


দৈনিক পরিবার | ভ্রমণ ডেস্ক এপ্রিল ১৩, ২০২৪, ০৬:০১ এএম কম খরচে ঘুরে আসুন থাইল্যাণ্ড

হাতে সময় কম, তবে বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছা প্রবল। এমন পরিস্থিতিতে থাইল্যাণ্ড হল আদর্শ গন্তব্য। থাইল্যাণ্ডে যতটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে, নগরজীবনের দারুণ উত্তেজনাও রয়েছে। তাই, থাইল্যাণ্ড এখন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম থাইল্যাণ্ড ভ্রমণের টিপস।
কিভাবে ভিসা করবেন
থাইল্যাণ্ড টুরিস্ট ভিসা বা থাইল্যাণ্ড ভ্রমণ ভিসা সাধারণত সিঙ্গেল এন্ট্রি ৩ মাসের ও মাল্টিপল এন্ট্রি ৬ মাসের মেয়াদের হয়। উভয় ভিসাতেই প্রতি এন্ট্রিতে থাইল্যাণ্ডে আপনি সর্বোচ্চ ৬০ দিন থাকতে পারবেন। থাইল্যাণ্ড ভিসা প্রসেসিং আপনি নিজে নিজে করতে পারেন অথবা চাইলে এজেন্সি দিয়েও করাতে পারেন। ঝামেলা এড়াতে চাইলে এজেন্সি দিয়ে করানো ভাল হবে। এছাড়া এজেন্সি ফরম পুরণ থেকে শুরু করে ভিসা আবেদন জমা করে আপনার কাছে পাসপোর্ট ফেরত দিবে। এতে আপনার কোন ঝামেলা হবে না। ভিসা ফি ও এজেন্সি এর সার্ভিস চার্জসহ আনুমানিক ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা মত খরচ হতে পারে।
কিভাবে যাবেন
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যাণ্ড যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমান ছাড়া বিকল্প নেই। থাইল্যাণ্ডের ফ্লাইটের টিকিট কাটার ক্ষেত্রে প্রথমেই সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিজে ফ্লাইটের দাম যাচাই বাছাই করে বুকিং দিতে হবে। বিভিন্ন এয়ারলাইনসের দাম তুলনা করে দেখে সুবিধা অনুযায়ী ফ্লাইট বুক করা দরকার। তাছাড়া বুক করে ফেলতে হবে একটু আগে থেকে। শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বুক করলে দাম বেশি পড়ার পাশাপাশি ফ্লাইট না পাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। তাই কমপক্ষে দুতিন সপ্তাহ আগে টিকিট বুক করে রাখা উচিত।
কোথায় থাকবেন
প্রযুক্তির এই যুগে কোথাও বেড়াতে গেলে আর থাকার জায়গা নিয়ে ভাবতে হয় না। নিজে অনলাইনের মাধ্যমে অথবা ট্রাভেল এজেন্সি এর মাধ্যমে দেশে থেকেই হোটেল বুকিং করতে পারবেন। তাই দেশে বসেই বুকিং দিয়ে যাওয়া ভালো। আমার মতে বাংলাদেশী টুরিস্টের জন্য সুকুমভিত এরিয়ার ১১নং রাস্তা উপযুক্ত। এখানে স্ট্রিট ফুডের সুনাম আছে, হাঁটা দূরত্বে মার্কেট আছে কয়েকটা, হাঁটা দূরত্বে মেট্রোরেল স্টেশন আছে যাতে যোগাযোগ খরচ কমে যায়।
কোথায় ঘুরবেন
থাইল্যাণ্ডে দেখার মতো জায়গার অভাব নেই। সব ধরনের পর্যটকদের জন্য সবকিছু আছে। সাধারণত, পর্যটকরা রাজধানী শহর ব্যাংককে অবতরণ করে। একটি সংক্ষিপ্ত সফরের জন্য, শুধুমাত্র ব্যাংকক পরিদর্শন যথেষ্ঠ। ব্যাংকক শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে আপনি ওয়াট ফো মন্দির, গ্র্যান্ড প্যালেস, ব্যাংকক জাতীয় জাদুঘর, ওয়াট অরুণ মন্দির, ইরা ওয়ান মন্দির ইত্যাদি দেখতে পারেন।
ফুকেট এবং ক্রাবি ব্যাংককের পরে থাইল্যাণ্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় শহর। সাধারণত এই স্থানগুলি তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত তবে তাদের শহুরে আকর্ষণ আলাদা। আসল থাই সংস্কৃতি দেখতে ক্রাবি পরিদর্শন করা উচিত। শহরে টাইগার টেম্পল এবং বিখ্যাত রেল সৈকত রয়েছে।
অন্যদিকে ফুকেটের সৌন্দর্য অতুলনীয়। এছাড়াও আপনি ফুকেট থেকে স্পিডবোট বা ফেরিতে করে ফি ফি দ্বীপপুঞ্জে যেতে পারেন। অন্যান্য জনপ্রিয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে চিয়াং রাই, চিয়াং মাই, কোহ সামুই, পাতায়া ইত্যাদি। চিয়াং মাই হল একটি চিত্র-নিখুঁত শহর যা জাতীয় উদ্যান, জলপ্রপাত, পাহাড়, মন্দির ইত্যাদি দ্বারা বেষ্টিত। জীবনযাত্রার খরচও কম। মায়ানমার সীমান্তের কাছে অবস্থিত, চিয়াং রাই শহরটি সাদা রঙের মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। তেমনি কোহ সামুই দ্বীপের সৌন্দর্যও মালদ্বীপের থেকে কম নয়।
কি খাবেন
থাইল্যাণ্ডের স্থানীয় খাবার খুবই সুস্বাদু। তাদের রান্নায় ঝালের ব্যবহার একটু বেশি। বিভিন্ন মসলা ব্যবহারেও দেশটি উৎকর্ষ সাধন করে। সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারগুলির মধ্যে একটি হল টম ইয়াম স্যুপ। এই মশলাদার খাবারটি সাধারণত ভাজা হয়। বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ দিয়ে এই স্যুপ তৈরি করা হয়। টম ইয়ামের একটি কম মশলাদার বিকল্প হল টম খা গাই। নারকেল দুধ দিয়ে তৈরি, এই খাবারে সাধারণত মাংস বা মাছ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
থাই সালাদের মধ্যে 'ল্যাব' খুবই জনপ্রিয়। যেকোনো ধরনের মাংস দিয়ে তৈরি এই খাবারটি সাধারণত খুব নোনতা হয়। প্যাড থাই নামক নুডুলস থাইল্যাণ্ডের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। প্যাড থাই হল বাদাম, মরিচ, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে রান্না করা ভাজা নুডুলস। এতে প্রোটিন হিসেবে চিংড়ি মাছ বা মাংসের টুকরা থাকে। রাস্তার খাবার হিসেবে পাবেন এই খাবার। এ ছাড়া আঠালো চালের সঙ্গে আম তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার। ফ্রাইড রাইস, গ্রিন কারি, রেড কারি ইত্যাদি থাইল্যান্ডে খুবই সুস্বাদু এবং জনপ্রিয়।
কেনাকাটা
থাইল্যাণ্ডকে কেনাকাটার স্বর্গ বলা হয়। যেকোনো বাজেটের পর্যটকরা এখানে কেনাকাটা করতে পারেন। ব্যাংকক শহরের সেন্ট্রাল মার্কেটের মতো ব্যয়বহুল বাজার রয়েছে, যেখানে বিশ্বের বিখ্যাত সব ব্যান্ডের আউটলেট রয়েছে, পাশাপাশি গইক-এর মতো মধ্যবিত্ত বাজার রয়েছে। তবে আমার পরামর্শ হলো ভালো মানের জিনিস কেনার জন্য রবিনসন মার্কেট সেরা। রাতের বেলা ব্যাংককের জীবন ও সৌন্দর্য আলাদা। রাতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকে শহর।

Side banner